চিয়া সিড খেলে কি হয় – উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড খেলে কি হয় এবং এর উপকারী বা কি রয়েছে এটা খেলে কি কোন ক্ষতি হয়? অনেকের মনে এরকম প্রশ্ন জাগে।
তাই আজকে আমি আপনাদের সামনে চিয়া সিড কি চিয়া সিড খেলে কি হবে, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, চিয়া সিড খাওয়ার অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
চিয়া সিড খেলে হজমশক্তির উন্নতি হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
এছাড়া এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেটে গ্যাস, ব্লোটিং, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে, তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
চিয়া সিড খেলে কি হয়
অনেকের মনে এই প্রশ্নটি জাগে যে এটি খেলে কি হয়। চিন্তার কোন কারণ নেই আপনারা একদম সঠিক জায়গাতে চলে এসেছেন।
এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই এর উপকার অপকার গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
চিয়া সিড খেলে কি হবে এবং এর উপকার বা অপকারি বা কি এগুলো জানার আগে আপনাকে আগে চিয়া সিড কি এ সম্পর্কে জানতে হবে।
চিয়া সিড কি?
এটি হচ্ছে সালভিয়া হিসপানিকা নামক মেইনট প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ।
চিয়া সিড মূলত মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে বেশি জন্মায়।
প্রাচীন স্টেক জাতীয় খাদ্য তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করে থাকেন যে এগুলো দেখতে অনেকটা তোকমা দানার মত।
তবে তোকমা দানা আর চিয়া সিড কিন্তু এক নয়।
চিয়া সিড এর বীজে পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। পৃথিবীর পুষ্টিকর খাবার গুলোর মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম।
স্টেক জাতির লোকজন মনে করত এতে তাদের শক্তি ও সাহস তারা এই খাবারটিকে সোনার চেয়েও মূল্যবান মনে করত।
এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, প্রোটিন ফ্যাট কার্বোহাইড্রেট এবং পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিন বি থাইমিন ও নিয়াসিন।
চিয়া সিড এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক প্রভাব হিসেবে কাজ করবে।
যদিও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নিয়ে গবেষকদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। চিয়া সিড খেলে কি হয় তা আমাদের জানা দরকার।
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ চিয়া সিড কারণ এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন এবং কার্যকরী।
আমরা সাধারণত মাছ-মাংস থেকে প্রোটিন পেয়ে থাকি।
আজকাল বাজারে ভেজাল পণ্যতে ছড়াছড়ি তাই আমাদের শরীরের প্রোটিন মেটাতেচিয়া সিড হতে পারে একটি দারুন সমাধান।
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি আঠাশ গ্রাম চিয়া সিড এ রয়েছে চার গ্রাম প্রোটিন।
হাড়ের সুস্থতার জন্য প্রোটিনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রোটিনের পাশাপাশি চিয়া সিড এ রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা হাড়ের সুস্থতা নিশ্চিত এ সাহায্য করে।
চিয়া সিড ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস গবেষকদের মতে চিয়া সিড এ সালমন মাছের চেয়েও বেশি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে। যা আপনার হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করত।
ওজন কমাতেও চিয়া সিড ও এর ভূমিকা অপরিসীম। চিয়া সিড খেলে কি হয় আশা করি এই আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন।
প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে কি সমস্যা হবে
এটি খেলে কি সমস্যা হবে এ প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন।
চিয়া সিড খেলে কোন ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ চিয়া সিড পুষ্টিগুণে ভরপুর একটা খাবার। তবে এটা নির্ভর করে অনেকের খাওয়ার উপরে।
কারণ এটা অনেকেই অনেক ভাবে খেয়ে থাকে। কেউ মিল্কের সাথে মিশিয়ে খাই।
এটা যেহেতু ফাইবার এ ভরপুর। তাই আপনার খাবার গুলোতে যদি ফাইবার না থাকে তাহলে প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে সমস্যা হবে না।
কারণ এর কার্যকারিতা অনেক বেশি প্রচুর পরিমাণে ফাইবার অক্সিডেন্ট থাকে তাই এটি নিয়মিত খেলে শরীরের জন্য ক্ষতি নয় বরং উপকার হয়ে থাকে।
অর্থাৎ আপনি চাইলে প্রতিদিন এক চা চামচ করে খেতে পারেন।
চিয়া সিড বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় আপনারা চাইলে কুসুম গরম পানিতে খেতে পারেন অথবা মিল্কের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন বা যে কোন ডেজার্ট এর সাথে মিক্স করে খেতে পারেন।
অতএব এই আলোচনা থেকে বোঝা গেল প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে কোন ধরনের সমস্যা হবে না।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম – চিয়া সিড খেলে কি হয়
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম হয়তো অনেকেই জানেন না।
তাই আমি আপনাদের চিয়া সিড কিভাবে খাবেন কিভাবে খেলে আপনারা ভালো ফলাফল পাবেন তা নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
চিয়া সিড যারা খেতে চান তাদের অবশ্যই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
কারণ চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। তাই সঠিক পদ্ধতি আপনাদের অবশ্যই জানা খুবই প্রয়োজন।
চিয়া সিড খাবার অনেক নিয়মাবলী রয়েছে আপনি চাইলে বিভিন্ন ভাবে চিয়া সিড খেতে পারেন।
প্রথমেই যে বিষয়টি আমাদের জানা প্রয়োজন চিয়া সিড কে আলাদা করে রান্না করার কোন প্রয়োজন নেই।
আপনি প্রতিদিন যেসব খাবার খাচ্ছেন তার সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন।
যেমন ডাল, সবজি, টক দই, পুডিং, জুস ইত্যাদি।
চিয়া সিড কখনো কাঁচা বা র খেতে যাবেন না। এক গ্লাস জলে দুই টেবিল চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখুন।
তারপর ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর চিয়া সিড গুলি জল শোষণ করে জেলির মতো থক থকে হয়ে যাবে।
এই জলে ভেজানো চিয়া সিড থেকে দুই চামচ বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
এরপরেও যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে অথবা খেতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে মন্তব্য করুন। আপনি চাইলে সারাদিনে এক থেকে দুই চা চামচ চিয়া সিড খেতে পারেন।
চিয়া সিড একটি সুপার ফুড।
তাই এটি বেশি পরিমাণ খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে এমন ধারণা একেবারেই ভুল।
সঠিক পরিমাণে প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে প্রচুর উপকারিতা পাবেন।
তবে অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেমন বদহজম হতে পারে রক্তের ঘনত্ব কমে যেতে পারে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে বা অ্যালার্জিও দেখা দিতে পারে।
তাই পরিমাণ মতো আপনি চিয়া সিড গ্রহণ করুন।
চিয়া সিড খেলে কি হয়
কেন চিয়া সিড খাবেন? চিয়া সিড খাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে।
কেননা চিয়া সিড এমন একটা খাবার যাতে পুষ্টিগুণে একদম পরিপূর্ণ।
এক হাজার খাবারের মধ্যে গবেষণা করে দেখা গেছে সবচাইতে পুষ্টিকর খাবার গুলোর মধ্যে পাঁচ নাম্বারে রয়েছে চিয়া সিড।
চিয়া সিড খাওয়ার কারণ বলে শেষ করা যাবে না। হার্ট কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এমন ফ্যাক্ট হয়েছে এই খাবারে।
চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা থ্রি যা হৃদরোগের ঝুঁকি ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
এটি শরীরের শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করে।
মেটাবলিজম সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এই খাবার ওজন কমাতে সহায়তা করে।
চিয়া সিড ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে যা ডায়াবেটিস হওয়া থেকে বিরত রাখে।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারী। চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখি যার ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। আমরা জানলাম চিয়া সিড খেলে কি হয়
এটি শরীর থেকে টক্সিন নামক দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
চিয়া সিড পেটের প্রদাহ জনিত বা গ্যাসের সমস্যা দূর করে এবং ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে।
চিয়া সিড হজম করতে সাহায্য করে এবং হাঁটুর ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বক চুল ও হাতের নখ সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে। এ
ছাড়াও চিয়া সিড এর গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
বাড়তি ওজন কমাতে এটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
চিন্তার কোন কারণ নেই যারা চিয়া সিড খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমাতে চান তারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে খুব সহজে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।
আপনারা অনেকেই জানেন চিয়া সিড একটি প্রোপার ফুড যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
এ কথাটি আসলেই সত্য ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চিয়া সিড এর ভূমিকা অনেক। নিয়ম মেনে চিয়া সিড গ্রহণ করলে আপনি খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন।
ওজন কমাতে আপনারা অনেক কিছুই খেয়েছেন কিন্তু আজকে আমি আপনাদের কাছে যে নিয়মটি বলবো এই নিয়মে চিয়া সিড খেলে ইনশাআল্লাহ আপনার খুব সহজেই ওজন কমে যাবে।
সুপার ফুড চিয়া সিড জাতি রয়েছে ফাইবার প্রোটিন ম্যাঙ্গানিজ ক্যালসিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মিনারেল।
ওজন কমাতে আপনারা যেভাবে চিয়া সিড খাবেন তা বিস্তারিতভাবে নিচে তুলে ধরা হলো।
ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড দিয়ে আপনাদেরকে ড্রিঙ্কস তৈরি করে পান করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে ড্রিঙ্কস তৈরি করবেন তাইতো। ড্রিঙ্কস তৈরি করার জন্য একটি লেবু নিন কারণ লেবু ওজন কমাতে অনেক কার্যকরী।
লেবু তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যার ফলে আমাদের শরীরের ত্বক এবং চুলকে সতেজ রাখে। ড্রিঙ্কস টি তৈরি করার জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানি নিয়ে নিন। আমরা বুঝতে পারছি, চিয়া সিড খেলে কি হয়।
তারপরে লেবুগুলো কেটে তার রস গ্লাসের মধ্যে দিয়ে দিন।
তারপর দুই টেবিল চামচ গ্লাসের মধ্যে দিয়ে দিন দুই চামচের বেশি চিয়া সিড কিন্তু দেয়া যাবে না।
এবার এই উপকরণগুলোকে চামচের মাধ্যমে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। আপনারা চাইলে তার সাথে মধু ও মিশিয়ে নিতে পারেন।
ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পরে সাথে সাথে তা খেয়ে ফেলুন। এই নিয়ম অনুযায়ী আপনি যদি নিয়মিত এই ড্রিঙ্কস টি পান করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার ওজন কমে যাবে।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খেলে কি হয়
মেয়েদের গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া যাবে কি এই প্রশ্নটা অনেক গর্ভবতী মহিলারা করে থাকেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় এবং এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া কি নিরাপদ জি হ্যাঁ অবশ্যই নিরাপদ এবং এটা খাওয়ার ফলে প্রকৃতপক্ষে সুস্থ করে বাচ্চা প্রসব করার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।
গবেষকদের মতে ১০০ গ্রাম চিয়া সিড এ প্রায় ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
এক টেবিল চামচ চিয়া সিড খেলে প্রায় ৩ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
চিয়া সিডে আইরন ও পটাশিয়াম ও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। এ দুটি খনিজ গর্ভবস্থায় স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকার গুলো কি কি? ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য চিয়া সিড খাওয়া খুবই জরুরী।
কেননা চিয়া সিডে রয়েছে আলফা লিলোনিক এসিড এবং এক ধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। ওমেগা থ্রি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ ফ্যাটি এসিড গুলো নিউরাইড টিসুগুলোর বৃদ্ধিতে অবদান রাখে এবং জ্ঞানীয় ফাংশান ও চাক্ষুষ বিকাশ কে সমর্থন করতে পারেন। অবশ্যই জানলাম, চিয়া সিড খেলে কি হয়।
শিশুর দাঁত ও হাড়ের জন্য গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজন।
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করেন।
চিয়া সিড সে ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী যারা ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারেন না বা নিরামিষ ভোজি। চিয়া সিড রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
রক্তস্বল্পতা হলো গর্ভাবস্থায় আরেকটি বিশেষ সমস্যা।
গর্ভাবস্থায় শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রনের প্রয়োজন হয়।
সারা শরীরে এবং শিশুর অক্সিজেন পরিচালনা করার জন্য লোহিত রক্ত কণিকার গুরুত্ব অনেক। তাই এ সময় আয়রন গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হবে আমরা জানি চিয়া সিডে অনেক পরিমাণ আইরন রয়েছে।
এই আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতেই পারছেন গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া যাবে কিনা।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা – চিয়া সিড খেলে কি হয়
এটি খাওয়ার উপকারিতা এত যে বলে শেষ করা যাবে না।
চিয়া সিড এক প্রকার নিউট্রিয়েন্ট ফুড। এর মধ্যে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা আমাদের শরীরকে সতেজ এবং মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
এর মধ্যে ভিটামিন বি গোষ্ঠীর যে ভিটামিন গুলো রয়েছে যেমন বি১ অর্থাৎ থায়ামিন বি২ যেটাকে রাইবোফ্লাবিন বলা হয় বি৩ অর্থাৎ নিয়াসিন বি৬ বায়োডক্সিন হাইড্রোক্লোরাইড এ ধরনের আচ্ছা ভিটামিন গুলো রয়েছে তা ভরপুর মাথায় থাকে।
এছাড়া এর মধ্যে প্যান্টোথানিক এসিড থাকে, ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস জিংক এইযে এতগুলো মিনারেলস রয়েছে মিনারেলসগুলো আমাদের শরীরকে খুব সুন্দর এবং মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
বিশেষত এর মধ্যে এ এল এ নামক কম্পাউন্ড থাকে। অর্থাৎ আলফা লেনোলেনিক এসিড এটি এক প্রকার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড এর মতই হয়ে থাকে।
আলফা লেলোলেনিক এসিড আমাদের হার্ট কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে।
চিয়া সিড এর মধ্যে যে পুষ্টিগুণ গুলো রয়েছে আমরা সর্বদা স্ট্রং এবং মজবুত থাকবো।
চিয়া সিড ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। জেনে রাখতে হবে, চিয়া সিড খেলে কি হয়।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন হতে পারে এই ছোট ছোট চিয়া সিড আমাদের কিভাবে ওজন কমায়।
কারণ আমরা তো খাবো একদম অল্প পরিমাণ তাহলে কিভাবে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাবে।
চিয়া সিড এরমধ্যে দুটো বিষয় মূলত কাজ করে প্রথমটি হলো এর মধ্যে হাই ফাইবার থাকে।
হাই ফাইবার যখন আমাদের পেটের মধ্যে যাবে আমাদের খাবার-দাবার থেকে যে অতিরিক্ত চর্বিগুলো উৎপাদন হবে তা এই চিয়া সিড শোষণ করে ফেলে।
এছাড়াও এটি ক্যালোরি কনজাংশন কে কমাতে সাহায্য করে।
তাই আমাদের শরীরে যখন চর্বির শোষণটা কমবে তখন আমাদের শরীরের অতিরিক্ত যে চর্বিগুলো জমে রয়েছে তা আস্তে আস্তে গলতে শুরু করবে।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি খুব সহজেই কমে যায়।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
এটি খাওয়ার অপকারিতা খুব একটা নেই তবে খুব বেশি অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে তা জেনে রাখা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে অনেক বেশি ওজন কমে যেতে পারে।
অনেক বেশি ওজন কমে যাওয়ার ফলে আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিয়া সিড ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
তবে অতিমাত্রায় চিয়া সিড গ্রহণের ফলে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হতে পারে তাই আপনাদের অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আবার অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে কারো কারো বদ হজম হয়ে থাকে।
তাই আপনাদের উচিত পরিমাণ মতো চিয়া সিড গ্রহণ করা তাহলে আশা করি আপনাদের শরীরে কোন ধরনের সমস্যা হবে না বিশেষ করে এ বিষয়টির উপর গর্ববতী মহিলারা বেশি মনোযোগী হবে।
প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে কি হয়
প্রতিদিন কি পরিমানে চিয়া সিড খাবেন তা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই ধারণা নেই।
কেউ ভাবে অনেক বেশি চিয়া সিড খেলে মনে হয় অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে কিন্তু ধারণাটি একদম ভুল কেননা অতিরিক্ত কোন খাবারে বেশি গ্রহণ করা উচিত নয়।
অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে যে কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্য সচেতন বান্দের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সুপার ফুড নামক এই চিয়া সিড।
কেননা এতে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
আপনারা হয়তো ভাবেন যে এতসব উপকার রয়েছে এই বীজে তাহলে বেশি করে খাওয়া মনে হয় অনেক উপকারে আসবে তবে বিষয়টি কিন্তু তা নয়।
উপকার যতই থাকুক না কেন নির্দিষ্ট পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
হারবারট মেডিকেল স্কুলের একটি রিপোর্ট বলছে প্রতিদিন ২৮ গ্রাম অথবা দুই টেবিল চামচ থেকে তিন টেবিল চামচ চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে।
সুস্থ থাকতে এটি আপনাকে নানাভাবে সাহায্য করবে।
ইউএসডিএ ন্যাশনাল ডাটাবেজ অনুসারে এক আউন্টস দুই চামচ চিয়া সিড এ রয়েছে ১০ গ্রাম ফাইবার।
চার গ্রাম প্রোটিন ৯ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি। দৈনন্দিন চাহিদার ১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম এবং ৩০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম ও ২৭ শতাংশ ফসফরাস।
তারা বলেন অতিরিক্ত চিয়া সিড গ্রহণের ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন নিয়মিত চিয়া সিড খেলে ডায়াবেটিস সহ ওজন কমতে সাহায্য করে।
ইউরোপীয় জার্নাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় বলছে চিয়া সিড উচ্চ রক্ত চাপ যুক্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। বুঝলাম, চিয়া সিড খেলে কি হয়
চিয়া সিড এর মধ্যে পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকলেও এটি অতিরিক্তমাত্রায় গ্রহণ করা উচিত নয়।
আপনি যদি নিয়মিত পরিমাণ মাফিক চিয়া সিড গ্রহণ করেন তাহলে অনেক বেশি উপকার পাবেন আশা করি এই আলোচনার মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন আপনি প্রতিদিন কি পরিমান চিয়া সিড খাবেন।
চিয়া সিড খেলে কি ওজন বাড়ে
এটি খেলে কি ওজন বাড়ে? আজকাল বেশিরভাগ মানুষেরই ওজনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ ওজন বাড়াতে চান আবার কেউ ওজন কমাতে চান।
ওজন কমানোর কথা উঠলেই চিয়া সিড এর নামটাই যেন সবার প্রথমে চলে আসে।
কিন্তু চিয়া সিড যে আমাদের ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে তা হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা নেই।
ওজন বাড়ানোর জন্য চিয়া সিড সঠিক নিয়মে খেলে আপনার ওজন দ্রুতই বেড়ে যাবে।
তাই আজকে আমি চিয়া সিড কিভাবে খেলে আপনার ওজন বাড়বে তা সম্পর্কে জানাবো।
চিয়া সিড পুষ্টিগুণে ভরপুর তাই চিয়া সিড ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রেএকটি ভাল খাবার হতে পারে।
এটি প্রোটিন ফাইবার এবং ওমেগা থ্রির ভালো উৎস যা ওজন বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ওজন বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাবারের সাথে চিয়া সিড যোগ করুন।
আপনি চিয়া সিড কে ওট মিল দুধ দই সালাত এবং অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। অথবা চিয়া সিড দিয়ে জুস বা ইসমুদি তৈরি করুন।
চিয়া সিড দুধ পানি বা জুসের সাথে মিশিয়ে একটি সুস্বাদু পানীয় তৈরি করুন।
এটি দিয়ে ডেজার্ট তৈরি করুন চিয়া সিড কে ডেজার্ট এর সাথে মিশিয়ে এটি কে আরো পুষ্টিকর খাবার করে তুলতে পারেন।
চিয়া সিড ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী উপাদান হতে পারে।
তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে ওজন বাড়ানোর জন্য আপনাকে আপনার সামগ্রিক ক্যালোরি বাড়াতে হবে। চিয়া সিড আপনাকে ক্যালোরি গ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
এটি আপনার স্বাস্থ্যকে বাড়ানোর জন্য একটি সুষম খাদ্য।
চিয়া সিড প্রতিদিন পানিতে ভিজিয়ে রেখে খান পানিতে ভিজানোর পর যতক্ষণ পর্যন্ত না জেলির মত হয়। চিয়া সিড কে উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খান।
তাহলে এটি আপনাকে আরো বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি চিয়া সিড খেয়ে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করেন তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই আলোচনার মাধ্যমে চিয়া সিড খেলে ওজন বাড়ে কিনা তা সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
FAQ – চিয়া সিড খেলে কি হয়
দিনে কতটি চিয়া বীজ খাওয়া উচিত?
এক আউন্স (২৮ গ্রাম বা ২-৩ টেবিল চামচ) চিয়া বীজের একটি সাধারণ পরিবেশন।
হজমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কমাতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে ভুলবেন না।
প্রতিদিন চিয়া বীজ খেলে কী হবে?
প্রাণী এবং মানুষের উপর সীমিত গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন চিয়া বীজ গ্রহণ করলে ওজন এবং হাড়ের খনিজ উপাদান বেশি হ্রাস পেতে পারে।
তবে, খুব বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই প্রতিদিন ১ আউন্স (২৮ গ্রাম) এর মতো ছোট ডোজ দিয়ে শুরু করুন
এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে ভুলবেন না।
চিয়া বীজ খাওয়া কি পেটের চর্বি কমাতে পারে?
প্রাণী এবং মানুষের উভয় গবেষণায় দেখা গেছে যে চিয়া বীজ নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভিসারাল (পেটের) চর্বি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, বৃহত্তর, উচ্চমানের গবেষণা প্রয়োজন.
শেষ কথা – চিয়া সিড খেলে কি হয়
এর উপকারিতা অপকারিতা খাওয়ার নিয়ম সহ আরো নানান বিষয় নিয়ে আমাদের এই পোস্টটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
এই পোস্টটিতে আমাদের অজান্তে কোথাও যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
বিষয়টি আমাদেরকে জানানোর চেষ্টা করবেন আপনি চাইলে মন্তব্য করতে পারেন।
কন্টাক্ট পেজে গিয়ে ভুল সংশোধন করতে আমাদেরকে মেসেজ দিতে পারেন আমরা অবশ্যই তা সমাধান করার চেষ্টা করব।
পরিশেষে আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি মন্তব্য করবেন।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি এরকম আরো তথ্যবহুল পোস্ট করতে চান তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত ভিজিট করুন।
আর আপনার যদি কোন কিছু নিয়ে জানার ইচ্ছা থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদেরকে অবগত করুন আমরা সে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই পোস্ট লেখার চেষ্টা করব।
আমাদের এই পোষ্টটিকে পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।


